গৃহপরিচারিকার ঝুলন্ত মরদেহ | চিরকুটে বিদ্যা অর্জনের আক্ষেপ

336

হবিগঞ্জ শহরে ব্যবসায়ীর বাসা থেকে পুষ্প চৌধুরী নামে এক গৃহপরিচারিকার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাওয়া গেছে দু’টি চিরকুটও। একটি মৃতের ব্যবহৃত ব্যাগে আর অপরটি খাটের উপর। কাগজে লেখা ছিল বিদ্যা অর্জন করতে না পারার আক্ষেপ।
গতকাল শুক্রবার সকালে জেলা শহরের এসডি স্টোরের সত্তাধিকারী শংকর দাশের বাসা থেকে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ভেতরের দিকে বন্ধ থাকায় কক্ষের দরজা ভেঙ্গে মরদেহ বের করতে হয়।
পুষ্প বানিয়াচং উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের প্রবাল চৌধুরীর মেয়ে। প্রায় ৫ বছর পূর্বে ১৪ বছর বয়সে ময়মনসিংহের খালিয়াজুড়ির বাসিন্দা প্রাঞ্জল দাসের সাথে তার বিয়ে হয়। তখন সে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় এক বছর পর সেখান থেকে চলে আসেন।
পুষ্পের ভাই কৃষ্ণ চৌধুরী জানান, বিয়ের পূর্বেই প্রাঞ্জল দাস পাগল ছিলেন। কিন্তু তার পরিবার বিষয়টি গোপন রেখেই আমার বোনের সাথে বিয়ে দেয়। প্রায় এক বছর সংসারের পর তারাই পুষ্পকে ফিরিয়ে দেয়। তবে সেখান থেকে এসে বাড়ি ফিরেনি তার বোন। বিভিন্ন স্থানে গৃহ পরিচারিকার কাজ করছিল সে।
এসডি প্লাজার সত্তাধিকারী শংকর দাশ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ ঘুমিয়ে পড়ে পুষ্প। সকালে ডাকাডাকি করলেও সাড়া মেলেনি। পরে জানালা দিয়ে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। ভেতরের দিকে দরজা বন্ধ থাকায় পুলিশ দরজা ভেঙ্গে মরদেহ উদ্ধার করে। শুক্রবার রাতে তার দাহ সম্পন্ন হয়।
তিনি আরো জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে পুষ্প আমার বাড়িতে কাজ করছিল। এর আগে সে অন্যত্র কাজ করে। প্রতিদিনই সে সবার সাথে হাসিমুখে আচরণ করতো। তবে কোন অনুষ্ঠান হলে তার কক্ষ থেকে বের হতো না। আমি তাকে নিজের মেয়ের মতোই দেখতাম। সেও সকলকে আপন করে নিয়েছিল। তবে প্রায়ই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকতো মেয়েটি।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাসুক আলী জানান, প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে ময়মনসিংহের খালিয়াজুরীতে এক ছেলের সাথে বিয়ে হয় পুষ্পের। ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় স্বামীর বাড়ি থেকে চলে আসেন তিনি। এরপর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন পুষ্প। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। মৃতের পরিবারেরও কোন অভিযোগ নেই। এ ব্যাপারে অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।