____ ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, “Your degree is just a piece of peper,Your education is seen in behavior”. অর্থাৎ “তোমার শিক্ষাগত যোগ্যতা কেবলমাত্র কাগজের একটা টুকরো,কিন্তু তোমার শিক্ষাটি তোমার আচরনে প্রকাশ পাবে”।
প্রকৃত শিক্ষা,মানুষ ও প্রানীর মাঝে ব্যবধানের দেয়াল তৈরী করে।আর পুঁথিগত শিক্ষা মনুষত্ব্য বোধ তৈরী করতে পারে না।তখন সে মানুষ হয়েও প্রানী তথা অমানুষের ন্যায় কার্যকলাপ চালায়।
একটি দেশের গুরু দায়িত্ব তার হাতেই ন্যস্ত করা হয়,যার মধ্যে উচ্চশিক্ষা বিদ্যমান।যেমন, সরকারেরে বড় বড় আমলা থেকে শুরু করে যারা রাস্ট্রের আপামর জনগনের সার্বিক কাজের দেখভাল করার কাজে ন্যস্ত থাকেন।
কিন্তু কথা হচ্ছে একজন উচ্চ শিক্ষিত আমলা কিভাবে অমানবিক কাজ করতে পারে!!তখন স্বভাবিক ভাবেই গ্রন্থগত বিদ্যার প্রসঙ্গ এসে যায়।
আসল কথায় আসা যাক__
বর্তমানে প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা,অনৈতিক কার্যক্রম ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ জনগণকে উদ্বিগ্ন ও ভোগান্তিতে ফেলেছে। প্রশাসন তথা সকল সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীরা জনগণের টাকার বেতনভুক্ত কর্মচারী,জনগণের টাকায় তাঁদের বেতন ও সকল সুযোগ সুবিধা হয়।এক কথায় তারা জনগণের গোলাম। অথচ কিছু কিছু সরকারী কর্মকর্তার আচরণ এতটাই অমানবিক আর বেসামাল হয়ে উঠেছে,যা নিয়ে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ আজ আতঙ্কিত।বর্তমান সময়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দ্বারা ঘটে যাওয়া কিছু কিছু ঘটনা প্রবাহই প্রমান করে,আমাদের প্রশাসনেও পচন ধরেছে।
সমাজ/রাস্ট্র বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সাধারন জনগনও মনে করছে,প্রশাসনের আজকের এই পচনের জন্য রাজনীতিকরণ/স্বজনপ্রীতি/ চাটুকারিতাই সবথেকে বেশি দায়ী।
কিছুদিন আগে জামালপুরের ডিসির অনৈতিক কর্মকাণ্ড,সম্প্রতি কুড়িগ্রামে ডিসির সাংবাদিকের উপর ডাকাতের মতো করে আক্রমণ কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে যশোরের এসি ল্যান্ডের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ জনগনকে অবাক করেছে।আর রাস্ট্র ব্যবস্থার উপর তুলেছে আঙুল।তবে স্থানীয় পর্যায়ে যারা চলাফেরা করেন এবং প্রশাসনের খোঁজ খবর রাখেন, তাঁরা জানেন , জামালপুর কিংবা কুড়িগ্রামের ডিসি বা যশোরের এসিল্যান্ডের এই আচরণ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা না।দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের ভেতর রাজনীতিকরণ, দলবাজি এবং বিভিন্ন লবিং প্রভাবে প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড বা শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে।
কুড়িগ্রামের আরডিসি র মত সমাজের কীট গুলো এদেশের সমাজ ব্যবস্থাও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বার বার।তিনি কক্সবাজারে দায়িত্ব পালন কালেও নানারকম অপকর্মর সাথে জরিত।তখন রাস্ট্র কেনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।শুধু বদলীতেই সিমাবদ্ধ।তাই দেশের আমলাদের দ্বারা বারবার এদেশের মানুষের নিগৃহীত হওয়া নতুন কিছু নয়।কিন্তু এই অপকর্মের দায় রাস্ট্র প্রধানদেরই নিতে হবে।এরা বারবার খোলস পালটায়।
বিগত প্রায় এক দশক ধরে সরকারী বেতনভুক্ত আমলারা জনগনের সেবক হবার বদলে রাজনৈতিক নেতা হওয়ার মানসিকতা পোষণ করছেন।বলা বাহুল্য যে,কে কোথায় বদলী হবে,কার পদবী কি হবে,এ ক্ষেত্রেও দক্ষতা প্রমাণের তুলনায় কে কত সরকারী দলের সেটা প্রমাণের চেষ্টা করা হচ্ছে।সচিব থেকে শুরু করে বড় বড় কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পাওয়ার অভিযোগ এসেছে। আর এ কারণে শুধু মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন নয়,পুরো প্রশাসনের শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।রাস্ট্রের প্রতি,সকল জনগনের প্রতি তাদের দায়িত্বপালনের যে লক্ষ্য,সেই লক্ষ্য ভ্রষ্ট হচ্ছে দিন দিন।দেশের আমলাতন্ত্র হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ।
শুরু থেকেই এ দেশের আমলাতন্ত্র একটা চাটুকার এবং দলবাজ আমলাতন্ত্রে পরিণত হইয়েছে।এটা যে কোন দেশেরই সুশাসন ও জনসেবার পরিপন্থী।সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে যে ঘটনাগুলো ঘটছে,সেটা তারই বহিঃপ্রকাশ।
পরিশেষে একটি কথা__ “মানুষের মত দেখতে,কিন্তু আসলে জানোয়ার সবে,তোরা আবার আসল মানুষ হবি কবে”।