করোনা ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বেড়েই চলছে। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি সনাক্ত এবং একশ ষাটের অধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মানুষ থেকে মানুষের দেহে এই ভাইরাস কিভাবে ছড়ায় সে বিষয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি চিকিৎসা বিজ্ঞান। তবে সাধারণ কিছু সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এসব সাবধানতা অবলম্বন করলে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। গণপরিবহন এড়িয়ে চলা এবং সতর্কতার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
বাস, ট্রেন কিংবা অন্য যে কোন ধরনের পরিবহনের হাতল কিংবা আসনে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। সেজন্য যে কোন পরিবহনে চলাফেরার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা এবং জনসমাগম থেকে ফিরেই পরিধেয় বস্ত্রসহ সাবান দিয়ে ভাল করে গোসল সেরে নেয়ার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা আরো বলছেন, হাঁচি-কাশি থেকে করোনাভাইরাস ছড়ায়। যে কোন জায়গায় করোনাভাইরাস কয়েক ঘন্টা এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। তাই সর্বাবস্থায় দূরত্ব বজায় রেখে সতর্কতা মেনে চলাই একমাত্র ভরসা।
মানবিক বলয়ে যখন দূরত্ব শব্দটি ব্যবহার করা হয়, তার একটি নেতিবাচক মাত্রিকতা আছে। প্রায়ই আমরা বলি, তুমি অনেক দূরে সরে গেছো কিংবা চিন্তার ক্ষেত্রে আমাদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দূরত্ব মানুষ চায় না, কিন্তু ওই দূরত্বের ব্যাপারটি আবার ফিরে এসেছে জোরেশোরে বর্তমান সময়ের করোনা ভাইরাস সংকট কালে।
তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে প্রতিমূহুর্তে প্রচারিত হচ্ছে এবং প্রতিটা গণমাধ্যমে বারবার বলা হচ্ছে যে এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার অন্য কোনো বিকল্প নেই। সংক্রমণ রোধে এটা অত্যাবশ্যকীয়। পথে-ঘাটে, দোকান-পাটে, বিদ্যালয়-পাঠাগারে অর্থাৎ সামাজিক মেলামেশার প্রতিটি স্থানেই একটি মানুষের সঙ্গে আরেকটি মানুষের ন্যুনতম শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা বড় প্রয়োজন। এটি নিশ্চিত করার ব্যাপারে রাষ্ট্রের যেমন বিরাট ভূমিকা আছে তেমনি প্রতিটি নাগরিকদের দূরত্ব বজায় রাখা আবশ্যক। রাষ্ট্র মানুষকে সচেতনতার প্রয়োজনে আইন প্রণয়ন করতে পারে এবং সেই আইন প্রয়োগও করতে পারে। কিন্তু সাধারণ জনগন যদি দায়িত্বশীল না হয়,সেই আইন প্রনয়ন করেও কোন ফল আসবে না। কিন্তু মনে রাখা দরকার যে তাদের এই দায়িত্বহীন কাজের ফলে তারা তাদের পরিবারের মধ্যে, আশপাশের জনসাধারণ কে সংক্রমিত করতে পারেন এবং তাদের মৃত্যুর কারণও হতে পারেন। তাই করোনার ভয়াবহ ছোবল থেকে গৃহের অভ্যন্তরে অবস্থানই বাচাতে পারে। অপ্রয়োজনে বাইরে যাবেন না এবং বাইরে গেলেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে তবেই সংকটের যে বিশাল ব্যপ্তি থেকে বাচার পন্থা হতে পারে।