শ্রমিক সংকটে বিপাকে ইরি-বোরো চাষীরা, পাকা ধান নিয়ে শঙ্কা।

442
শ্রমিক সংকটে বিপাকে ইরি-বোরো চাষীরা, পাকা ধান নিয়ে শঙ্কা
শ্রমিক সংকটে বিপাকে ইরি-বোরো চাষীরা, পাকা ধান নিয়ে শঙ্কা

করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিক সংকট সৃষ্টি হওয়ায় বোরো মৌসুমের পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন কৃষকেরা। দেশের অন্যতম ধান উৎপাদনকারী জেলা কুমিল্লার লাকসাম অঞ্চলে এমন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
এবারের আবহাওয়া কৃষিবান্ধব হওয়ায় এ অঞ্চলে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
কিন্তু সময়মত ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারলে মহাসংকটে পড়বে কৃষিনির্ভর অর্থনীতির এই কৃষকেরা। বিগত ধানের মৌসুমে উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর থেকে শ্রমিক আসলেও এবারের লকডাউনের কারণে শ্রমিকেরা আসতে পারে নি।

শ্রমিক সংকটে বিপাকে ইরি-বোরো চাষীরা, পাকা ধান নিয়ে শঙ্কা।
পাকা ধান

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর লাকসাম অঞ্চলে (লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোট) চলতি মৌসুমে ২৯ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে ইরো-বোরো চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন। তার মধ্যে লাকসামে ৮ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে ৩৭ হাজার মেট্রিক টন, মনোহরগঞ্জে ৯ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে ৪৫ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন এবং নাঙ্গলকোটে ১২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা থেকেও উৎপাদন বেশি হবে বলে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস প্রত্যাশা করছেন। তিন উপজেলার একাধিক কৃষক বাম্পার ফলনের কথা নিশ্চিত করে বলেন, ঘরে ফসল তোলার এই সময় আমরা আনন্দে কাটানোর কথা থাকলেও নানা দুশ্চিন্তায় আছি। করোনাঝুঁকি, শ্রমিক সংকট ও বিরূপ আবহাওয়া আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।

কৃষি উপকরণ ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে ধান উৎপাদন খরচ ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে বলে জানান একাধিক কৃষক। দৈনিক জনপ্রতি কৃষকের মজুরি, খাবারসহ ৭-৮শ টাকা খরচ হচ্ছে যা এক মন ধানের দামের চেয়েও বেশি। চলমান প্রেক্ষাপটে তারা উৎপাদন খরচে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। সরকারিভাবে প্রতি মন ধান ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানান। অন্যথায় তারা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনার সুফল পেতে চান।
লাকসাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল হক বলেন, কৃষকদের যে কোনো সমস্যায় আমরা সবসময় পাশে আছি। ধান কাটার জন্য কেউ অন্য জেলা থেকে শ্রমিক আনতে চাইলে আমাদের জানালে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। লাকসাম ও নাঙ্গলকোটে ভুর্তুকি মূল্যে ধান কাটার (কম্বাইন্ড হারভেস্টার) পৃথক দুটি যন্ত্র কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন একটি মেশিনে সর্বোচ্চ ১০ হেক্টর জমির ধান কাটা ও মাড়াই করা সম্ভব হবে। বৃহত্তর লাকসাম অঞ্চলে ইরি-বোরোর বাম্পার ফলনে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা প্রত্যাশা করছেন।