বুধবার রাতে ভারতের মণিপুরে দুই কুকি নারীর নৃশংস যৌন নির্যাতনের একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সারা দেশে আলোড়ন শুরু হয়। রাজ্যে সহিংসতা শুরু হওয়ার ৭৭ দিন পরে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমবারের মতো ঘটনাটি নিয়ে কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া জবাব দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘আমার হৃদয় ব্যথা ও ক্রোধে ভরা। মণিপুরে যে ঘটনা সামনে এসেছে তা যে কোনো সুশীল সমাজের জন্য লজ্জাজনক। প্রধানমন্ত্রী মোদি সংসদের বর্ষা অধিবেশনের আগে তার প্রথাগত বক্তৃতায় একথা বলেন, মণিপুরের মেয়েদের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে তা কখনো ক্ষমা করা যাবে না।
ভিডিওটি ভারত জুড়ে ক্ষোভের জন্ম দেওয়ার পরে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং বলেছেন যে সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে “মৃত্যুদণ্ড” বিবেচনা করছে।
৩ মে, অর্থাৎ ৪ মে সহিংসতা শুরু হওয়ার পরদিন বুধবার রাতে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায় একদল যুবক দুই মহিলাকে গ্রামের রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে ধানক্ষেতে নিয়ে যাচ্ছে। ওই দুই নারী সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ওই দুই নারীকে যৌন নিপীড়ন করছে কয়েকজন যুবক। দুই নারী কাঁদছে আর মুক্তির জন্য ভিক্ষা করছে। সংক্ষিপ্ত ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে ধানক্ষেতের মধ্য দিয়ে নারীদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।


রাস্তায় মশাল নিয়ে বিক্ষোভ করেন মহিলারা। ইম্ফল, মনিপুর, ভারত, ১৮ জুলাই
বিভিন্ন কুকি সংস্থার প্রাথমিক তদন্তের পর প্রকাশিত ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট’ অনুসারে, এই দুই মহিলা ভাইফেই গ্রুপের কুকি সম্প্রদায়ের সদস্য। তাদের একজনের বয়স ২০ বছর এবং অন্যের বয়স ৪০ বছর।
কুকি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা জানান, মেইতেই সম্প্রদায়ের নির্দিষ্ট সংগঠনগুলো নারীর প্রতি এই সহিংসতা চালিয়েছে।
ভিডিও নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি এবং ভারতের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে আদালতে তলব করেছেন। আদালতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন ভেঙ্কটরামানি ও মেহতা।
দুই আইনজীবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “দুই নারীকে নিয়ে বুধবার প্রকাশিত ভিডিওতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা এখানে আমাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এখন সরকারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।”